সূরা লায়ল – কাব্যানুবাদ

শুরু করি শুভ নাম লয়ে আল্লার,
দয়া করুণার যিনি মহা-পারাবার।

শপথ রাতের আবৃত যখন করে সে অন্ধকারে
দিনের শপথ প্রোজ্জ্বল যাহা করে দেয় জ্যোতিঃধারে,
নর ও নারীর শপথ – যাদের তিনি সে স্রষ্টা প্রভু,
তোমাদের যত কর্মফল একমত নহে কভু।
যারা দাতা সংযমী, সত্যধর্মে সত্য বলিয়া লয়,
সহজ করিয়া দিব কল্যাণে তাহাদেরে নিশ্চয়।
কিন্তু যাহারা কৃপণ, নিজেরে ভাবে অতি বড়ো যারা,
বলে সত্যধর্মে মিথ্যা, শীঘ্র দেখিতে পাইবে তারা,
সহজ করিয়া দিয়াছি তাদের দোজখের পথ, আর
রক্ষা করিতে পারিবে না তারে তার ধন-সম্ভার।
তখন ধ্বংস হইবে সে, জেনো সুপথ প্রদর্শন
কর্তব্য সে আমার, একাল পরকাল সবখন
কেবল আমারই এক্তিয়ারে সে। করি তাই সাবধান,
প্রজ্বলিত সে অনল হইতে জ্বলজ্বল লেলিহান।
হত ভাগা সেই জন সত্য হতে যে মুখ ফিরায়,
সে ছাড়া সেই যে অগ্নিকুণ্ডে পশিবে না কেহ হায়।
সে অনল হতে রক্ষা পাইবে সেই সংযমী জন
শুদ্ধ হবার মানসে যে জন করে ধন বিতরণ।
কাহারও দয়ার প্রতিদানরূপে করে না সে ধন দান,
তাহার মহিমময় সে প্রভুরে তুষিতে যত্নবান।

সূরা লায়ল পবিত্র কোরআনের ৯২ নম্বর সূরা। এই সূরা মক্কাতে নাজেল হয়। ইহাতে ২১টি আয়াত, ৭১টি শব্দ ও ৩১৪টি অক্ষর আছে।

শানে-নুজুল – আবুবকর (রাঃ) ও ২য় খালাফের পুত্র ওমাইয়া মক্কায় ধনাঢ্য ও সম্ভ্রান্ত সমাজ-নেতা ছিলেন। ওমাইয়া ১২টি কিঙ্কর দ্বারা নানা উপায়ে বিপুল অর্থ উপার্জন করিয়াছিলেন। পরকালের জন্য কেন তিনি দান করেন না? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলিতেন – প্রয়াসী বিপুল অর্থ সম্পদ থাকিতে কল্পিত বেহেশ্‌তের সম্পদ লাভের আশায় আমি নাই। ইনিই হজরত বেলালের মনিব ছিলেন। ওমাইয়ার গৃহে রাত্রে ক্রন্দনের শব্দ শ্রবণ করিয়া হজরত আবুবকর স্বীয় ক্রীতদাস নাস্তাশ ও ৪০টি স্বর্ণমুদ্রার বিনিময়ে বেলালকে ক্রয় করিয়া হজরতের সামনে নিয়া তাঁহাকে মুক্তি দান করেন।
অতএব, আবুবকর ও ওমাইয়া সম্বন্ধে এই সূরা নাজেল হয়।

0 Shares