ব্যোমকেশ লম্বা হইয়া শুইল, বলিল, ‘আর কোনও প্রশ্ন আছে?’
‘দাড়ি কামালো কখন? ট্রেনে?
‘হ্যাঁ। সেইজন্যেই ফার্স্ট ক্লাসের টিকিট কিনেছিল। ফার্স্ট ক্লাসে সহযাত্রীর সম্ভাবনা কম।’
সত্যবতী বলিল, ‘মহীধর বাবুকে বেনামী চিঠি কে দিয়েছিল?
ব্যোমকেশ বলিল, ‘প্রোফেসর সোম। কিন্তু বেচারার প্রতি অবিচার কোরো না। লোকটি শিক্ষিত এবং সজ্জন, এক ভয়ঙ্করী স্ত্রীলোকের হাতে পড়ে তাঁর জীবনটা নষ্ট হতে বসেছে। সোম সংসারের জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে রজনীর প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন। কিন্তু সেদিকেও কিছু হল না, ডাক্তার ঘটকের প্রবল প্ৰতিদ্বন্দ্বিতায় তিনি হেরে গেলেন। তাই ঈর্ষার জ্বালায়–। ঈর্ষার মতন এমন নীচ প্রবৃত্তি আর নেই। কাম ক্ৰোধ লোভ-ষড়রিপুর মধ্যে সবচেয়ে অধম হচ্ছে মাৎসর্য।’ একটু চুপ করিয়া থাকিয়া বলিল, ‘মালতী দেবীর অসুখের খুবই বাড়াবাড়ি যাচ্ছে। কারুর মৃত্যু-কামনা করতে নেই, কিন্তু মালতী দেবী যদি সিথেয় সিঁদুর নিয়ে এই বেলা স্বর্গারোহণ করেন তাহলে অন্তত আমি অসুখী হব না।’
আমিও মনে মনে সায় দিলাম।
(সমাপ্ত)