ছলনার ছন্দ

গঙ্গাপদ মেঝোয় বসে গলায় হাত বুলোচ্ছিল‌, চমকে উঠে বলল–’আমাকে লক-আপ-এ রাখবেন। আমি কী অপরাধ করেছি?’

রাখালবাবু বললেন–‘তুমি অশোক মাইতিকে খুন করাবার চেষ্টা করেছিলে। তোমার অপরাধ পিনাল কোডের কোন দফায় পড়ে পাবলিক প্রসিকিউটার তা স্থির করবেন। ওঠো এখন। ‘

সন্ধ্যের পর ব্যোমকেশের বসবার ঘরে চায়ের পেয়ালায় চুমুক দিয়ে রাখালবাবু বললেন–’আচ্ছা ব্যোমকেশদা‌, নরেশ মণ্ডল আর গঙ্গাপদ চৌধুরী–দু’জনেই চাকরির খোঁজে আসবে আপনি আশা করেছিলেন?’

ব্যোমকেশ বলল–’আশা করিনি‌, তবে সম্ভাবনাটা মনের মধ্যে ছিল। কিন্তু ওরা যে একই সময়ে এসে গজ-কচ্ছপের যুদ্ধ শুরু করে দেবে তা কল্পনা করিনি। ভালই হলো‌, একই ছিপে জোড়ামাছ উঠল। — নরেশ মণ্ডলের ঘরখানা তল্লাশ করে কী পেলে?’

‘পিস্তল পাওয়া গেছে। ওর বিরুদ্ধে মামলা পাকা হয়ে গেছে। এখন দেখা যাক গঙ্গাপদকে পাকড়ানো যায় কি না। তাকে হাজতে রেখেছি‌, আর কিছু না হোক‌, কয়েকদিন হাজত-বাস করে পাপের প্রায়শ্চিত্ত করুক।’

‘হুঁ। অশোক মাইতির খবর কি?’

‘সে এখনো হাসপাতাল থেকে বেরোয়নি। বেরুলেও তাকে এখন কলকাতায় থাকতে হবে। সে আমাদের প্রধান সাক্ষী।‘

ব্যোমকেশ হঠাৎ হেসে উঠল‌, বলল— ‘কথায় বলে‌, রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়‌, উলুখাগড়ার প্রাণ যায়। অশোক মাইতি খুব বেঁচে গেছে। ও না বাঁচলে এমন রহস্যটা রহস্যই থেকে যেত।’

(সমাপ্ত)

0 Shares