মগ্নমৈনাক

নেংটি সচকিত অবিশ্বাসের স্বরে বলিয়া উঠিল‌, ‘পেরেছেন।’

ব্যোমকেশ বলিল‌, ‘হ্যাঁ। তুমি পেরেছ নাকি।’

নেংটি আমতা আমতা করিয়া বলিল‌, ‘আমি–আমি তো গোড়া থেকেই জানি।’

‘গোড়া থেকেই জানো! কি করে জানলে? বুদ্ধি খাটিয়ে বের করেছ? আততায়ীর নাম বল তো শুনি?’

নেংটি স্খলিত স্বরে বলিল‌, ‘মেসোমশাই।’

ব্যোমকেশ ক্ষণকাল অবাক বিস্ময়ে চাহিয়া থাকিয়া বলিল‌, ‘তুমি জানো! কি করে জানলে?’

নেংটি দ্রুত বিহ্বল কণ্ঠে বলিল‌, ‘আমি যে স্বচক্ষে দেখেছি‌, ব্যোমকেশদা। আমি বাড়ির পিছন দিকের পাইনগাছে উঠে সিগারেট খাচ্ছিলাম। এমন সময় হেনা ছাদে এল‌, মাদুরটা পেতে বসতে যাবে‌, হঠাৎ মেসোমশাই পশ্চিমদিকের ভারা বেয়ে উঠে এলেন। তাঁকে দেখেই হেনা দৌড়ে পুবদিকে গেল‌, তিনিও তার পিছনে ছুটলেন‌, তাকে ঠেলা দিয়ে ছাদ থেকে ফেলে দিলেন।’

ব্যোমকেশ কঠোর চক্ষে চাহিয়া বলিল‌, ‘তুমি এতদিন একথা বলনি কেন?’

নেংটি কাতর স্বরে বলিল‌, ‘কি করে বলি‌, ব্যোমকেশদা। উনি আমাদের অন্নদাতা‌, ওঁকে পুলিসে ধরিয়ে দেব কি বলে? তবু আপনাকে খবর দিয়েছিলাম‌, জানতাম‌, কেউ যদি অপরাধীকে ধরতে পারে তো সে আপনি।’

ব্যোমকেশের মুখ নরম হইল‌, সে নেংটির-কাঁধে হাত রাখিয়া বলিল‌, ‘নেংটি‌, তুমি তাড়াতাড়ি বাড়ি যাও। সন্তোষবাবু মারা গেছেন।’

(সমাপ্ত)

0 Shares