কয়েকটি লাইন

কেউ যাহা জানে নাই – কোনো এক বাণী –
আমি বহে আনি ;
একদিন শুনেছ যে- সুর-
ফুরায়েছে,- পুরানো তা – কোনো এক নতুন-কিছুর
আছে প্রয়োজন ,
তাই আমি আসিয়াছি,- আমার মতন
আর নাই কেউ !
সৃষ্টির সিন্ধুর বুকে আমি এক ঢেউ
আজিকার ;- শেষ মুহূর্তের
আমি এক;- সকলের পায়ের শব্দের
সুর গেছে অন্ধকারে থেমে;
তারপর আসিয়াছি নেমে
আমি;
আমার পায়ের শব্দ শোনো ,-
নতুন এ – আর সব হারানো- পুরানো ।

উৎসবের কথা আমি কহি নাকো ,
পড়ি নাকো দুর্দশার গান,
যে কবির প্রাণ
উৎসাহে উঠেছে শুধু ভরে ,-
সেই কবি- সে –ও যাবে স’রে;
যে কবি পেয়েছে শুধু যন্ত্রণার বিষ
শুধু জেনেছে বিষাদ ,
মাটি আর রক্তের কর্কশ স্বাদ ,
যে বুঝেছে ,- প্রলাপের ঘোরে
যে বকেছে,- সে- ও যাবে স’রে ;
একে- একে সবি
ডুবে যাবে; – উৎসবের কবি,
তবু বলিতে কি পারো
যাতনা পাবে না কেউ আরো ?
যেই দিন তুমি যাবে চ’লে
পৃথিবী গাবে কি গান তোমার বইয়ের পাতা খুলে ?
কিংবা যদি গায় ,- পৃথিবী যাবে কি তবু ভুলে
একদিন যেই ব্যথা ছিল সত্য তার ?
আনন্দের আবর্তনে আজিকে আবার
সেদিনের পুরানো আঘাত
ভুলিবে সে? ব্যথা যারা স’য়ে গেছে রাত্রি – দিন
তাহাদের আর্ত ডান হাত
ঘুম ভেঙে জানবে নিষেধ ;
সব ক্লেশ আনন্দের ভেদ
ভুল মনে হবে;
সৃষ্টির বুকের’পরে ব্যথা লেগে রবে,
শয়তানের সুন্দর কপালে
পাপের ছাপের মত সেই দিনও !-
মাঝরাতে মোম যারা জ্বালে,
রোগা পায়ে করে পায়চারি,
দেয়ালে যাদের ছায়া পড়ে সারি সারি
সৃষ্টির দেয়ালে ,-
আহ্লাদ কি পায় নাই তারা কোনোকালে ?
যেই উড়ো উৎসাহের উৎসবের রব
ভেসে আসে – তাই শুনে জাগেনি উতসব ?
তবে কেন বিহ্বলের গান
গায় তারা!- বলে কেন, আমাদের প্রাণ
পথের আহত
মাছিদের মতো !

উৎসবের কথা আমি কহি নাকো ,
পড়ি নাকো ব্যর্থতার গান;
শুনি শুধু সৃষ্টির আহ্বান ,-
তাই আসি,
নানা কাজ তার
আমরা মিটায়ে যাই ,-
জাগিবার কাল আছে- দরকার আছে ঘুমাবার ;-
এই সচ্ছলতা
আমাদের ;- আকাশ কহিছে কোন কথা
নক্ষত্রের কান্র?-
আনন্দের? দুর্দশার ? – পড়ি নাকো । সৃষ্টির আহ্বানে আসিয়াছি ।
সময় সিন্ধুর মতো :
তুমিও আমার মতো সমুদ্রের পানে , জানি, রয়েছ তাকায়ে ,
ঢেউয়ের হুঁচোট লাগে গায়ে ,-
ঘুম ভেঙে যায় বার-বার
তোমার – আমার !
জানি না তো কোন কথা কও তুমি ফেনার কাপড়ে বুক ঢেকে ,
ওপারের থেকে ;
সমুদ্রের কানে
কোন কথা কই আমি এই পারে – সে কি কিছু জানে?
আমিও তোমার মতো রাতের সিন্ধুর দিকে রয়েছি তাকায়ে ,
ঢেউয়ের হুঁচোট লাগে গায়ে ,-
ঘুম ভেঙে যায় বার-বার
তোমার আমার ।

কোথাও রয়েছ , জানি,- তোমারে তবুও আমি ফেলেছি হারায়ে;
পথ চলি- ঢেউ ভেজে পায়ে ;
রাতের বাতাস ভেসে আসে ,
নক্ষত্রের’পরে
এই হাওয়া যেন হা-হা করে !
হু-হু ক’রে ওঠে অন্ধকার !
কন রাত্রি – আঁধারের পার
আজ সে খুঁজিছে !
কত রাত ঝ’রে গেছে,- নিচে-তারো নিচে
কোন রাত – কোন অন্ধকার
একবার এসেছিল ,- আসিবে না আর ।

0 Shares