শুরু করিলাম লয়ে নাম আল্লার,
করুণা কৃপার যিনি অসীম পাথার।
গ্রহ-উপগ্রহ ভরা শপথ আকাশের,
আর শপথ প্রতিশ্রুত রোজহাশরের
শপথ উপস্থিত, উপস্থাপিত সবার,
ধ্বংস হল সে অধিকারিগণ পরিখার।
কাষ্ঠপূর্ণ অগ্নিকুণ্ড-অধিকারিগণ
বসেছিল তদুপরি তাহারা যখন।
আল্লায়-বিশ্বাসিগণে ধরিয়া তথায়
ফেলিয়া দেখিতেছিল নিজেরাই, হায়!
সাজা দিতেছিল শুধু অপরাধে এই
বিশ্বাসিগণের প্রতি; বিশ্বাসীরা যেই
ইমান আনিয়াছিল আল্লাহ্র প্রতি,
অনন্ত-প্রতাপ যিনি মহীয়ান অতি।
স্বর্গ মর্ত্য রাজত্বের অধিপতি যিনি,
জ্ঞাত এ-সবের তত্ত্ব একমাত্র তিনি।
ইমানদার সে নর-নারীরে যাহারা
দেয় যন্ত্রণা, তৌবা নাহি করে তাহারা
ইহারই জন্য যাবে দোজখে নিশ্চয়,
অনল দাহন জ্বালা যেথা শুধু রয়।
অবশ্য যাহারা সৎ ‘নেক’ কাজ করে,
আনে সে ইমান; আছে তাহাদের তরে,
এমন বাগান, যার নিম্নদেশ দিয়া
পুণ্য-তোয়া নদী সব চলিছে বহিয়া।
শ্রেষ্ঠ সফলতা এই নিশ্চয় তোমার
প্রভু প্রতাপান্বিত বিপুল বিথার।
প্রথমে সৃজিয়া যিনি গড়েন আবার
তিনি মহা-প্রেমময় ক্ষমাবান, আর
জগৎ-সাম্রাজ্য-সিংহাসনের পতি,
ইচ্ছাময় প্রভু তিনি গরীয়ান অতি।
ফেরাউন সামুদের সেনা – সস্বার
তাদের বৃত্তান্ত শোনা আছে কি তোমার?
জান কি কেমনে হল তারা ছারখার?
যে জন অমান্য করে আদেশ আমার
সত্যেরে অসত্য বলা কাজ যে তাহার।
অথচ আল্লাহ্তালা ঘিরিয়া তাহায়
পরিব্যাপ্ত রয়েছেন চারিদিকে, হায়!
মহিমান্বিত মহা কোর-আন এই
লিখিত সুরক্ষিত পাক ‘লওহে’ ই।
সূরা বুরুজ পবিত্র কোরআনের ৮৫ নম্বর সূরা। এই সূরা মক্কা শরিফে অবতীর্ণ হয়। ইহাতে ২২টি আয়াত, ১০৯টি শব্দ ও ৪৭৫ টি অক্ষর আছে।
শানে-নজুল – মক্কার পৌত্তলিকেরা মুসলমানগণকে ইসলাম গ্রহণ করার দরুন নানা প্রকার উৎপীড়ন করিত। হজরতের নিকট মুসলমানগণ অভিযোগ করায় তিনি উত্তরে বলিয়াছিলেন যে, এক সময় তাহাদের দুর্ব্যবহারের প্রতিশোধ গ্রহণ করিতে খোদা তোমাদিগকে সক্ষম করিবেন। এ কথা শ্রবণ করিয়া কাফেররা বলিতে লাগিল – এরূপ দুর্বল, অপমানিত ও অর্থহীন লোকেরা কীরূপে প্রতিশোধ লইতে সক্ষম হইবে? খোদার ইচ্ছাতেই আমরা সম্মানিত আর তাহারা হেয় ও লাঞ্ছিত। কাফেরদের উক্ত কথার প্রত্যুত্তরস্বরূপ ওই সময় এই সূরা অবতীর্ণ হয়। অগ্নিকুণ্ড স্থাপয়িতাদের পরিণাম বর্ণনা করিয়া ইসলাম ধর্মাবলম্বীদিগকে ইহাতে সান্ত্বনা প্রদান করা হইয়াছে।