সূরা লাহাব – কাব্যানুবাদ

শুরু করিলাম নামে সেই আল্লার,
করুণানিধান যিনি কৃপার পাথার।

ধ্বংস হোক আবুলাহাবের বাহুদ্বয়,
হইবে বিধ্বস্ত তাহা হইবে নিশ্চয়।
করেছে অর্জন ধন-সম্পদ সে যাহা
কিছু নয়, কাজে তার লাগিবে না তাহা।
শিখাময় অনলে সে পশিবে ত্বরায়
সাথে তার সে অনল-কুণ্ডে যাবে হায়
জায়া তার – অপবাদ – ইন্ধনবাহিনী,
তাহার গলায় দড়ি বহিবে আপনি।

সূরা লাহাব পবিত্র কোরআনের ১১১ নম্বর সূরা। এই সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ। ইহাতে ৫টি আয়াত, ২৪টি শব্দ, ৮১টি অক্ষর রয়েছে।

শানে-নুজুল – বোখারী ও মোছলেম প্রভৃতি টীকাকারদের মতে খোদাতালা হজরতের আত্মীয়-স্বজনদের সম্বন্ধে শাস্তির ভীতি প্রদর্শনসংক্রান্ত আয়ত অবতীর্ণ করিলে তিনি সাফা পর্বতের উপর আরোহণ করিয়া আরবের তদানীন্তন নিয়মানুসারে উচ্চৈঃস্বরে ‘সাবধান’ ‘সাবধান’ বলিয়া চিৎকার করিতে থাকেন। তাহাতে কোরায়েশ বংশের অনেক লোক তথায় উপস্থিত হইয়া হজরতকে জিজ্ঞাসা করে, কী হইয়াছে? হজরত তাহাদের সম্বোধন করিয়া বলিলেন যে, যদি আমি বলি যে, একদল শত্রু তোমাদিগকে আক্রমণ করিবার জন্য পর্বতের অপর পার্শ্বে উপস্থিত হইয়াছে, তবে তোমরা আমার এই কাজের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করিবে কি? তদুত্তরে তাহারা বলিল, নিশ্চয় বিশ্বাস স্থাপন করিব। আমরা বেশ পরীক্ষা করিয়াছি, আপনি কখনও মিথ্যা কথা বলেন না। তৎপরে হজরত বলিলেন, – হে কোরেশগণ! তোমাদের সম্মুখে জ্বলন্ত দোজখের মহাশাস্তি রহিয়াছে; যদি তোমরা আমার ও খোদার বাণীর উপর আস্থা স্থাপন না কর, তবে তোমাদিগকে ওই শাস্তি ভোগ করিতে হইবে। তোমরা স্ব স্ব আত্মাকে উক্ত শাস্তি হইতে রক্ষা করো। ইহা শুনিয়া আবু লহব (হজরতের পিতার বৈমাত্রেয় ভ্রাতা, তাহার স্ত্রী আবু সুফিয়ানের ভগ্নী উম্মে জামিলা) রাগান্বিত হইয়া বলিল, ‘তাব্বান লাকা’ – তোর ধ্বংস হউক। এই ঘটনার পর এই সূরা অবতীর্ণ হয়। (বোখারী)

0 Shares